শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় পাশের বাসার ফ্রিজে রাখা বাসি বিরিয়ানি খেয়ে দুই ভাই-বোনের মৃত্যু হয়েছে।এরপর তাদের বড় বোনও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে সাথী আক্তার (১৪) নামের ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়।
সৌরভ (৬) ও খাদিজা (৫) নামের দুই ভাই-বোন এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে মারা যায়। তারা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের মুলাই ব্যাপারিকান্দি গ্রামের শওকত দেওয়ানের সন্তান। পাশের বাসার ফ্রিজে রাখা বাসি বিরিয়ানি খেয়ে গত মঙ্গলবার দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়ে তিন ভাই–বোন।
ওই শিশুদের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, তিন মেয়ে ও দুই ছেলে শওকত দেওয়ানের। প্রতিবেশী রওশন আরা বেগমের ফ্রিজে থাকা বাসি বিরিয়ানি মঙ্গলবার দুপুরে খায় মারা যাওয়া তিন ভাই-বোন ও তাদের মা আইরিছ বেগম।
এরপর থেকে তাদের পেটে ব্যথা ও বমি হতে থাকে। অসুস্থতা বাড়তে থাকায় পরিবারে চার সদস্যকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
শিশু সৌরভ, খাদিজা ও তাদের বোন সাথী আক্তারকে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের মাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। শিশু খাদিজা ও সৌরভ মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আর সাথী আক্তারের
মৃত্যু হয় বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে।
মারা যাওয়া তিনজনের ফুফা বাদশা মাদবর বলেন, ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন ওদের বাবা শওকত দেওয়ান। কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই। এমন মৃত্যু আমরা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। কোথা থেকে যে কি হয়ে গেলো বুঝতে পারছি না। দুই শিশু মারা যাওয়ায় ওদের মা পাগলপারা, এখন বড় মেয়ের মৃত্যুর কথা শুনলে আরও পাগল হয়ে যাবে।
বিলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদ্দুস ব্যাপারী বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। এটি নিয়ে কিছুটা রহস্য দেখা দিয়েছে, আমরা বিষয়টা নিয়ে চিন্তিত। তাই ওদের লাশের ময়নাতদন্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কোনো অভিযোগ করতে চায়নি মারা যাওয়া তিনজনের পরিবার থেকে। তবে ঘটনাটি এড়িয়ে যাওয়ার নয়। ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।