অন্যান্য

আফগানের আকাশ থেকে পড়ল ২ যুবকের লাশ, দেখে জ্ঞান হারান বাড়ির মালিক

আকাশ থেকে ছাদে আছড়ে পড়েছিল দুই দেহ, দেখে জ্ঞান হারান বাড়ির মালিকের স্ত্রী

ওয়ালি সালেকের বাড়ির ছাদে দুই আফগান যুবক বিমান থেকে খসে পড়েছিল। এই ঘটনাটি সালেক এক সংবাদ সংস্থাকে ভিডিও কলে জানিয়েছেন।

আফগানিস্তানের দুই আফগানকে কাবুলের প্লেন থেকে খসে পড়তে দেখা গিয়েছিল। তাঁরা কোথায় গিয়ে পড়েছিলেন, তার উত্তর পাওয়া গেল। দু’টি দেহ কাবুল বিমানবন্দর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে একটি বাড়ির ছাদে আছড়ে পড়ে। এতটাই শব্দ হয়েছিল যে প্রতিবেশীরা ভেবেছিলেন বিস্ফোরণ হয়েছে হয়তো।

বাড়ির মালিক ছাদে যাওয়ার পর ভুল ভাঙে। দেখা যায় ছাদে পড়ে রয়েছে রক্তাক্ত দু’টি দেহ। দু’জনেরই বয়স কম। তবে তাঁদের মাথার খুলি ফেটে গিয়েছিল। পেট ফেটে বেরিয়ে এসেছিল নাড়িভুঁড়ি। খবর- এনডিটিভি ও আনন্দবাজার।

বিমানবন্দরের নিকটেই ওই জয়গাটির নাম খ্যায়ের খানা। সেখানেই দোতলা বাড়ি বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তাকর্মী ওয়ালি সালেকের। সোমবার দুপুরে যখন ঘটনাটি ঘটে তখন সালেক বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন । তাঁর দুই কন্যা ছিলেন রান্নাঘরে। দুই ছেলে ঘুমাচ্ছিলেন। প্রত্যেকে প্রবল শব্দে চমকে ওঠেন।

সালেক বলেছেন, ‘বাড়ির দেওয়াল থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছিল। আওয়াজ শুনে দৌড়ে ছাদে যাই। সেখানেই দেখি ওই দৃশ্য।’ স্বামীর পিছনে স্ত্রী জাকিয়া সালেকও এসেছিলেন। জাকিয়া বিকৃত হয়ে যাওয়া দেহ দু’টি দেখে প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই জ্ঞানও হারান তিনি। সালেক বলেছেন, ‘রক্ত আর শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গোটা ছাদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল। ওই দৃশ্য দেখা যাচ্ছিল না।’

সালেক ভিডিও কলে বাড়ির ছবি দেখিয়েছেন ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে । মৃতদেহ দু’টির ছবিও পাঠিয়েছেন। তবে অন্য একটি সংবাদ সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, মৃত দুই আফগান আসলে দুই সহোদর। তাঁদের নাম কবীর এবং রেজা। রেজার দেহ পরিবার খুঁজে পেলেও কবীরের দেহ পায়নি পরিবার।
যদিও ভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সালেকের সাক্ষাৎকার অনুযায়ী দু’জনেরই দেহ নিয়ে গিয়েছে তাদের পরিবার।

সালেক জানিয়েছেন, মৃত দুই যুবকের এক জনের বয়স ২৫। নাম শাফিউল্লা হোতাক। অন্যজন ২০ বছরের। নাম ফিদা মোহাম্মদ। বাড়ি কাবুলের কাছে পাঘমানে। সালেক পরিচয়পত্র পেয়েছিলন তাঁদের পোশাক পরীক্ষা করে। তাতে লেখা ছিল ঠিকানাও। তা দেখেই দু’জনের বাড়িতে খবর দেন সালেক। চাদরে দেহ মুড়ে বাড়ি থেকে ৩০০ মিটার দূরে একটি মসজিদে রেখে এসেছিলেন সালেক। ১০ -১২জন প্রতিবেশীও সঙ্গে ছিলেন। দুই যুবকের পরিবার সেখান থেকেই তাঁদের দেহ নিয়ে যান। সালেক প্রথমে ওই দুই যুবককে তালেবান ভেবেছিলো। তাদের হয়তো প্লেন থেকে মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পরে পরিচয়পত্র দেখে তার সেই ভুল ভেঙেছে।

সালেক বাড়ি থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে কাবুলে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন। তার সোমবার সন্ধে ৬টা থেকে শিফট ছিল।

রাতে বাড়ি ফিরে জানতে পারেন তাদের পরিবার মসজিদ থেকেই দুই আফগান ভাইয়ের দেহ নিয়ে গিয়েছে। সালেক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সোমবারের ঘটনা সে কোন দিনও ভুলতে পারবে না।  বলেছেন, ‘বিমানবন্দরের কাছে বাড়ি। মাঝেমধ্যেই অদ্ভুত শব্দ শুনতে পাই।

অনেকবার ভেবেছি প্লেন থেকে যদি কেউ ডলার ভর্তি ব্যাগ ফেলে দেয়, কী ভাল হয়। কিন্তু তার বদলে এসে পড়ল দেহ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *