অন্যান্য

চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত শতভাগ শিশুর মধ্যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট!

চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত শতভাগ শিশুর মধ্যে করোনার ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। জুন থেকে জুলাই মাসের ১ম সপ্তাহ পর্যন্ত ১২ জন শিশুর নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে এ তথ্য জানা গেছে। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে এই ১২ জন শিশু ভর্তি হয়। জানা যায়, এসব শিশুদের মধ্যে সবাই নবজাতক থেকে ১৬ বছর বয়সী।

একটি গবেষক দল রোববার (১৮ জুলাই) বিষয়টি জানিয়েছে। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চিকিৎসক ও অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় কান্তি বিশ্বাস ও ডা. নাহিদ সুলতানা এবং চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী ও ডা. আব্দুর রব মাসুম গবেষণা দলের নেতৃত্বে রয়েছেন।

গবেষক দলে আরও ছিলেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ফাহিম হাসান রেজা ও ডা. আজমাইন মাহতাব এবং চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. মিনহাজুল হক, ডা. রাজদ্বীপ বিশ্বাস ও ডা. মো. একরাম হোসেন। গবেষণার সার্বিক পরিকল্পনায় ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক ড. আদনান মান্নান।

জিনোম সিকোয়েন্সিং এর তত্ত্বাবধানে ছিল আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)- এর ভাইরোলজি বিভাগের গবেষকদল, যার নেতৃত্বে ছিলেন বিজ্ঞানী ড. মুস্তাফিজুর রহমান এবং ড. মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন।

গবেষণায় নেতৃত্ব দেয়া ডাক্তার আব্দুর রব বলেন, ‘যে ১২ শিশুর নমুনা নিয়ে গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে তাদের মধ্যে সর্বনিম্ন আট মাস বয়সের শিশুর নমুনায় ডেল্টা ভেরিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ৮০ ভাগেরই বয়স ১০ বছরের নিচে। শিশুদের ক্ষেত্রে অর্ধেক ছেলে ও অর্ধেক মেয়ে শিশুর নমুনায় এই ভেরিয়েন্ট দেখা গেছে।’

আমাদের অন্য একটি গবেষনা অনুযায়ী প্রাপ্ত বয়স্ক কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে ৮০ ভাগ রোগী পুরুষ হলেও শিশুদের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, একটি শিশু পুরোপুরি উপসর্গহীন ছিল। তাছাড়া করোনা শনাক্ত হয়ে ৯৫ ভাগ শিশুর জ্বরের লক্ষণ ও ৭০ ভাগ শিশুর সর্দি-কাশি ছিল।

ডা. হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, ‘আমাদের গত চার মাসের পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে চট্টগ্রামে জুন থেকে ৯০ ভাগ রোগীর মাঝেই ডেল্টা ভেরিয়েন্টের পাওয়া গেছে কিন্তু আলফা ও বিটা ভেরিয়েন্টের প্রকোপ ছিল মে মাস পর্যন্ত। এই পরিবর্তনের সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক হচ্ছে শিশুদের মাঝে সংক্রমণ ভয়ঙ্করভাবে বেড়ে যাওয়া।’

এই প্রসঙ্গে গবেষকদলের অন্যতম সদস্য ডা. সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, ধরা যায় গত ১ বছরে আমরা শিশুদের আক্রান্ত হতে দেখিনি, কিন্তু ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার পরে জুন মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ও তীব্রতা বেড়ে গেছে।

শিশুরা নিজের অনুভুতি কিংবা দুর্বলতা প্রকাশ করতে না পারায় অনেক শিশুই কোভিড টেস্টের বাইরে থেকে যাবে।’মূলত ডেল্টা ভেরিয়েন্টের কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে আমাদের গবেষনায় পরিলক্ষিত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *