অন্যান্য

ইভ্যালি বন্ধ করে ইনভেস্টমেন্ট ফেরত আনা সম্ভব নয়ঃ রাসেল

কোনো প্রতিষ্ঠানই বন্ধ করে ইনভেস্টমেন্ট ফেরত আনা সম্ভব নয়। ইভ্যালি বন্ধ করে কোনো সমাধান হবে না। তাই আমাদের ব্যবসা করার সুযোগ দিন, আমরা কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেব না। সুযোগ দিলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে পুরনো সব অর্ডার ডেলিভারি দেব।’

ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল শনিবার (২৪ জুলাই) রাত ১১টায় ফেসবুক লাইভে এসব কথা বলেন। ফেসবুক লাইভে ইভ্যালির বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যতে কীভাবে ব্যবসা করবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন রাসেল।

ইভ্যালির সিইও বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানই বন্ধ করে ইনভেস্টমেন্ট ফেরত আনা সম্ভব নয়। আমাদের ব্যবসা করার সুযোগ দিন, আমরা কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেব না।’

একটি প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে যদি ইভ্যালি বন্ধ করা যায় তাহলে হয়তো কোনো একটা গোষ্ঠী উপকার পাবে, কিন্তু তার চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ ইভ্যালি বন্ধ করা কোনো সমাধান না। বর্তমান সমস্যার কথা জানিয়ে রাসেল বলেন, ‘আমরা অনেককে রি-ফান্ডের চেক দিয়েছি তা আটকে গেছে। দুটি ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেছি, এটি সমাধানে আরও সাত থেকে ১০ দিন সময় লাগবে। এর মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে আমাদের পুরনো সব অর্ডার ডেলিভারি দেব। এজন্য সহযোগিতা দরকার।’

রাসেল আরও বলেন, ‘ ই-কমার্স নিয়ে কাজ করছে সরকারের দুটি সংস্থা। গত মাসের ২৯ তারিখ ই-কমার্স পরিচালনা সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে। সে সার্কুলারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে নির্দেশনা দিয়েছে তা আমাদের মানতে হবে। এ নিয়ম না মানলে মন্ত্রণালয় আমাদের লাইসেন্স বাতিল করে ব্যবসা বন্ধ করে দেবে। এই সিস্টেমে এখন সর্বোচ্চ ১০ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে।এখন আগের মত ৪৫-৬০ দিনের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দেওয়ার সুযোগ থাকছে না।

এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক পেমেন্ট সিস্টেমের যে নির্দেশনা দিয়েছে গ্রাহক পণ্য বুঝে না পেলে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অর্থ পাবে না। এসব নিয়মের কারণে ভবিষ্যতে ই-কমার্সে গ্রাহকের ক্ষতিগ্রস্ত বা প্রতারিত হওয়ার সুযোগ নেই।’

ইভ্যালির সিইও বলেন, আমাদের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে গেছে। এতো সমস্যার মধ্যে আমাদের অর্ডার আসছে। আজকেও ২০ কোটি টাকার অর্ডার পেয়েছি। এগুলো দিতে গেলে অবশ্যই নিয়ম মেনে দিতে হবে। এজন্য আমাদের কিছু সহযোগিতা প্রয়োজন। ইভ্যালি কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৭০ লাখ অর্ডারের পণ্য গ্রাহককে ডেলিভারি দিয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা। আমাদের ১০ লাখ ইউনিক গ্রাহক আছে। এখন আমাদের সুযোগ দিলে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে পারব। আগামীতে আমরা ডিসকাউন্ট অফার আস্তে আস্তে কমিয়ে লস কমাব।’

ইভ্যালিকে নিয়ে করা বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শন প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ জুলাই অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের ৪ প্রতিষ্ঠানকে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠান চারটি হচ্ছে- দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।

এরপর ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরীন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেলের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেওয়া হয় দুদকের পক্ষ থেকে। আদালতও একই নির্দেশনা দিয়েছেন।

এদিকে ইভ্যালির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বেশকিছু পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ভাউচারের বিপরীতে পাওনা অর্থ পরিশোধ না করায় তারা আর পণ্য দিচ্ছে না। সম্প্রতি ইভ্যালির গিফট ভাউচারে কেনাকাটার নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে। এদিকে ইভ্যালি ও আলিশা মার্টসহ ১০টি অনলাইন মার্চেন্টে পেমেন্ট স্থগিত করেছে বিকাশ।

এর আগে বেশ কিছু ব্যাংকও ইভ্যালির সঙ্গে তা‌দের ক্রেডিট, ডেবিট ও প্রি-পেইড কার্ডের লেনদেন স্থগিত করে। এরম‌ধ্যে রয়েছে- ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (এম‌টি‌বি), ব্র্যাক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ঢাকা ব্যাংক। পাশাপাশি ইউসিবি ও সিটি ব্যাংকও তাদের গ্রাহকদের এসব অনলাইন মার্চেন্টে লেনদেনের বিষয়ে সতর্ক করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *