ফেনী

ফেনীতে করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসক দম্পতি রিয়াজ উদ্দিন ও তার স্ত্রী সানজিদা

ফেনীতে নতুন করে আরো ৯ জন করোনা ভাইরাতে আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন ৯ জনসহ জেলায় আক্রন্ত বেড়ে ১৯৭৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন সিভিল সার্জনসহ ৪১ জন। বুধবার পর্যন্ত জেলায় ১৭৩১ জন সুস্থ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন দিগন্ত।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, বুধবার নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ মলিকুলার ল্যাবে ফেনী জেলার ৪৮টি এবং ফেনী বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে ৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে নতুন করে শনাক্ত হন ৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সদরের ৪ জন ও পরশুরামের ১ জন রয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ মলিকুলার ল্যাবে ফেনী জেলার ৩৫টি এবং ফেনী বক্ষব্যাধি ক্লিনিকে ২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে শনাক্ত হন ৪ জন।এদের মধ্যে দুইজন সদর ও দুইজন ছাগলনাইয়ার বাসিন্দা।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, গত ১৬ এপ্রিল ফেনীতে প্রথম এক যুবকের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রামন শনাক্ত হয়। শনাক্তের ২০৩ তম দিনে এসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯৭৯ জন।

নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ফেনীতে করোনা রোগীদের সেবায় বিশেষ ভূমিকা পালনকারী চিকিৎসক দম্পতি ডা. রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী আরাফাত ও তার স্ত্রী ডা. কাজী সানজিদা আক্তার নিজেরাই করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। রিয়াজ নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজের সহযোগি অধ্যাপক ও সানজিদা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের (ট্রমা সেন্টার) আবাসিক মেডিকেল অফিসার।

পরিবার সূত্র জানায়, গত কিছুদিন ধরে ডা. রিয়াজ চৌধুরী ও ডা. সানজিদা জ্বর-কাঁশি অনুভব করছিলেন। গত ১ অক্টোবর রোববার ফেনী ট্রমা সেন্টারে জীন এক্সপার্ট মেশিনে নমুনা পরীক্ষা করা হলে রিয়াজের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। ৩ মঙ্গলবার নমুনা পরীক্ষা করা হলে সানজিদার শরীরে করোনা সংক্রমন হয়। তারা দু’জনই নিজ বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন।

ফেনীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের জেনেক্সপার্ট ল্যাব, নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাব, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) এবং চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১১ হাজারের বেশি নমুনার ফলাফলে উক্ত সংখ্যা শনাক্ত করা হয়।

আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, গণমাধ্যমকর্মী, জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা, ব্যাংকার, প্রকৌশলী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিশু রয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৩০ জনকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে আক্রান্ত হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ফেনীতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জেলায় সিভিল সার্জনসহ ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৩৫ জন পুরুষ ও ৬ জন নারী রয়েছে। মৃতদের মধ্যে ১২ জন সোনাগাজীর, ১১ জন ফেনী সদর’র, ৭ জন দাগনভূঞা, ৬ জন ছাগলনাইয়া ও ৫ জন পরশুরাম উপজেলার বাসিন্দা।

তবে স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র জানায়, ফেনীতে আক্রান্ত অনেক রোগী উন্নত চিকিৎসা নিতে যেয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে মারা গেলেও বেশিরভাগ মৃতব্যক্তিদের সংখ্যা জেলার স্বাস্থ্য বিভাগে তালিকায় যোগ হয়নি।

প্রসঙ্গত, ফেনীতে কোভিড-১৯ শনাক্ত’র চার মাসের মাথায় সংক্রমিতের সংখ্যা ছাড়ালো ১ হাজার ৫শ অতিক্রম করলো। সংক্রমিতের সংখ্যা ৫শ ছাড়াতে সময় লাগে ৭৬ দিন। পরের ৫শ ব্যক্তি সংক্রমিত হতে সময় লাগে ২৬ দিন। আর পরবর্তী ৫শ ব্যক্তি সংক্রমিত হতে ৩৫ দিন সময় লাগে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *