ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ঝুঁ, কিতে থাকা কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চলের লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে।
বুধবার (২০ মে) দুপুর ১২ পযর্ন্ত জেলার বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চল থেকে প্রায় ১২ হাজারের মত মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। একই সঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে শতাধিক গবাদি।
ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রাতেই এসব লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে ৭৪ হাজার ৩৭৫ জন জেলে এবং ৫ হাজার ৫০০টি মাছ ধরার নৌকা/ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, কক্সবাজার জেলায় বিদ্যমান ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের জন্য বিদ্যমান ৫৭৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি আরও ২২১টি স্কুল কলেজ আশ্রয়কেন্দ্রে হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করে স্থানীয় সম্পদ, সিপিপি ও বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ভলান্টিয়ারসহ জনবল ও স্থানীয় যানবাহন রিকুইজিশন করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সম্ভাব্য দূর্যোগ পরবর্তী তাৎক্ষণিক সহায়তা প্রদানের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে ৪৬৫ মে. টন চাল, ৪ লাখ ১৬ হাজার টাকা জিআর ক্যাশ, ২ লাখ টাকা শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ, ২ লাখ টাকা গোখাদ্য ক্রয় বাবদ অর্থ এবং ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সব বরাদ্দ জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে উপজেলা/পৌরসভাওয়ারী বিভাজন করে মঙ্গলবার (১৯ মে) সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুকূলে ছাড় করা হয়েছে। এ মুহুর্তে ২৬৫ মে. টন জিআর চাল, ১ লাখ ১৬ লাখ টাকা, ১২২ বান্ডিল ঢেউটিন এবং ৫০০টি তাবু মজুদ রয়েছে।
উপজেলা পর্যায়ে জরুরি ভিত্তিতে শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী, উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ও যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও কোভিড-১৯ পরিস্থিতির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জিআর চাল, জিআর ক্যাশ এবং শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ অর্থ মজুদ রয়েছে।
প্রতি দুটি উপজেলায় প্রস্তুতি, সম্ভাব্য উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিবীক্ষণের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এলাকায় থেকে সম্ভাব্য দূর্যোগ মোকাবেলায় যথাযথ দায়িত্ব পালনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি ও সর্বশেষ অবস্থা জানার জন্য স্থানীয় আবহাওয়া দপ্তরের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
ঝুঁকিপূর্ণ লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা, ত্রাণ তৎপরতা, ঘুর্ণিঝড় পরবর্তী কার্যক্রমে সর্বসাধারণের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক কক্সবাজার জেলায় ৯ নম্বর বিপদ সংকেত বলবৎ আছে।
